প্রতিসারী ভালবাসা

ভালবাসি তোমায় (ফেব্রুয়ারী ২০১৪)

রক্ত পলাশ
  • ১৮
অনিমেষের লাল মারুতি গাড়িটা হঠাৎ বেশ শব্দ করেই ব্রেক কষে,শৈশবের প্রিয় রায়নগরের মোড়ে,ঠিক মোহন কাকুর দোকানের সামনে।মোহন কাকু এই আমূল বদলে যাওয়া অনিমেষকে দেখে সেই পুরোনো পান খাওয়া ঠোঁটের হাসি দেয়।এই হাসির কোন জবাব নেই অনিমেষের কাছে,সত্যি কথা বলতে জবাব দেওয়ার সময়টাই নেই তার।নিম্নবিত্ত মুখস্ত মুখগুলো আর ভাল লাগে না অনিমেষের।সেই মুখগুলোতে শুধু আত্মীয়তার ঋণ শোধের বায়না।অসহ্য !!
তার বেনসনের প্যাকেটটা খালি পড়ে আছে,ড্রাইভিং সিটের পকেটে।সে ভরাপেটের মানিব্যাগের বুক থেকে একশো টাকার একটা নোট বের করে ড্রাইভারের হাতে দিয়ে চোখের ইশারায় কাজ বুঝিয়ে দেয়।একসময় অনিমেষ অনেক বেশি কথা বলত।কারণে অকারণে কথা বলত,হাসত।এখন আর কাজ ছাড়া কথা তেমন একটা বলে না।ইশারাতেই যখন সব হয় তখন আর কথা বলে লাভ কি?

আলোরিকা-সদ্য কথা বলতে শেখা তার আড়াই বছর বয়েসী মেয়েটা,আধো আধো ভাষায় সারাদিনমানই খুঁটিনাটি প্রশ্ন তাড়ায় তার দিকে-বাবা তুমি আমার মতো ছোট টুপি পড় না কেন?তুমি আমার মতো ছড়া বলতে পারো না কেন?ও বাবা তুমি সিগারেট খাও কেন?আমাকে দাও আমিও খাব।ও বাবা তোমার ঠোঁট কালো কেন,আমার ঠোঁট তো লাল?বাবা,তোমার মতো আমার মুখেও চুল উঠে না কেন?তুমি যখন আমাকে ওম্মা দিয়ে আদর কর,তখন ঐগুলা আমার গালে কাঁটার মতো লাগে,আমার কাতুকুতু লাগে,স্টুপিড বাবা।ও বাবা, মামণি কোথায় গেছে?মামণিটা তোমার সাথে শুধু ঝগড়া করে কেন?শেষ প্রশ্নে এসে বরাবরই থমকে যায় অনিমেষ।তার মনে পড়ে যায় আলোরিকার মায়ের কথা,অনিতার কথা।মনে পড়ে যায় অনিতার সাথে সংসারের প্রথম দিকের সুন্দর দিনগুলোর কথা,সাথে সাথে মনে পড়ে যায় ছোটখাট কিছু একটা নিয়ে বড়সড় মন কষাকষি, আর দুজনেরই হাতে সময়ের বড় অভাবের কথা।সময়ের আদরে এখন তারা আপাতত আলাদা।তাই সংসারের কোন কোন অবাঞ্চিত অশান্তির মূলে কার দোষ কতোটা সেই হিসেবটা একা একা কষতে গিয়ে একসময় ভেঙে পড়তে হয় অনিমেষকে।তাই শেষ প্রশ্নটা সযত্নে ‍এড়িয়েই যেতে হয় ছোট মেয়ের কাছে।প্রশ্ন করতে করতে মেয়েটা যখন ক্লান্ত হয়ে থেমে যায়,তখন অনিমেষ এককথায় সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দেয়-“সোনা মা,আমি একটা ব্যাড বয়,তুমি একটা গুড র্গাল।”

ড্রাইভারটাকে সিগারেট আনতে পাঠিয়ে অনিমেষ আজকের এগ্রিমেন্টটার কথা ভাবছিল।জাপানী একটা কোম্পানির বেশ বড় একটা প্রপোজাল-প্রায় দেড় কোটি টাকার।ভাবতেই কেমন অনিমেষের চোখটা জ্বলজ্বল করে উঠল।সে স্বার্থের খেয়ালে লোভে জ্বলা চোখ নিয়ে থাই গ্লাসের জানলা পেরিয়ে রায়নগরের মোড়ের সেই পরিচিত কলতলাটাতে চোখ রাখল।একটা মেয়ে নিম্নবিত্ত হাতে একটার পর একটা কাপড় ধুয়ে যাচ্ছিল।দৃশ্যটা অনিমেষের অপরিচিত না।এই মেয়েটাও অনিমেষের অপরিচিত না।বরং খুব পরিচিত,হয়তো বা নিজের চেয়েও বেশি চেনে,বেশি জানে ঐ মেয়েটাকে।সুতপা।অনিমেষের প্রথম প্রেম।বাউন্ডুলে মধ্য ঊণিশে,সেই কবি আজাদের মতো করে,এই সুতপার মাঝেই একদিন অনিমেষ একজন রাবীন্দ্রিক প্রেমিকাকে খুঁজতে চেয়েছিল।দুঃসহ দুঃসময়েও যে গাইতে পারে;লিখতে না পারুক,অন্তত লেখাতে পারে;নাচতে না পারুক,অন্তত নাচাতে পারে! পরনে ধানি-রঙা শাড়ি,হাতে হলদে সবুজ চুড়ি,কেশদানিতে বেনামি ফুল, কর্ণলতিকায় কাঠগোলাপ পরে চোখাচোখি দাঁড়িয়ে নাকফুলের বেড়াজাল ডিঙিয়ে কাব্যিক কমান্ডারের ঢঙে যে হুকুম করতে পারে --'কী লিখেছ আমায় নিয়ে, তোমায় নিয়ে, আমাদের নিয়ে? সমর্পণ করো!'
এইসব তখনকার দেখা স্বপ্ন,যখন অনিমেষ কবিতা পড়ত,কবিতা লিখত,কবিতা খেত,কবিতায় ঘুমুত।দিনযাপনের চাঁদনীঘাটে বসে,বুকের বোতাম খুলে দাঁড়িয়ে থাকা কোন বখাটে বিকেলে, কুয়াশার ওড়নায় জলজ বুক ঢেকে রাখা উর্বশী সুরমার কোলে বসে ;সম্বোধনের আড়াই অক্ষরে প্রেমিকার নামটা নিয়ে ,ভুল বানানের প্রেমপত্র লিখত।মাছরাঙা রোদে ভিজে গিয়ে রোজ কবিতার অসুখে ভুগত।কখনো সখনো-একটা নিঃসঙ্গ দোয়েলের ভোরে জোড়া শালিকের গান গাইতে গাইতে ভালোবাসার গায়ে আদরের চিমঠি কাটত।চিলেকোঠার নীল জানালাটা আলগোছে খুলে দিয়ে কালো আকাশটারে খেরোখাতা করে নক্ষত্রগুণে সংখ্যাতত্ত্ব শিখত।অসীমের ঐ বেলোয়ারি সরোবরে তারাদের স্নান দেখে দেখে শাহরিয়ারের মতো করে পাঁজর নিংড়ে উচ্চারণ করতে পারত দু’চারটা চপল প্রেমের পংক্তি---------------

“আমার তারারা উজালা বালিকা
ঘন ঘন প্রেমে পড়ে,
একটি তারা ডুব দিয়ে উঠে
রাত্রির সরোবরে।”

অথবা
প্রথম প্রেমের রাজকন্যার এলোচুলের নৈর্ব্যত্তিক খোঁপা বাধা দেখে প্রেমিক ঠোঁটে বলে ওঠতে পারতো-------

“যে রাতে গুঁজেছো চুলে বেগুনি রিবন বাঁধা ভাট,
সে রাতে নরকও ছিলো প্রেমের তল্লাট।”----------------------

কিন্তু আজকাল অনিমেষের আর কবিতা ভাল লাগে না,আগের মতো আর কবিতা বুঝতে পারে না ।বিখ্যাত একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির অ্যানুয়েল রিপোর্ট পর্য্যন্তই আটকে থাকে সে।যদিও সে জানে,তার চারপাশের যে পরিচিত মানুষগুলো,তাদের মুখগুলোই একেকটা মৌলিক কবিতা।কিন্তু যার নিজের মুখটাই আয়নায় দেখা হয় না কোন কোন দিন, যার আধখাওয়া গ্লাসের জলে ডুবে থাকে দিনযাপনের কবিতা,সে কি করে ঐ মুখগুলোর ছবি পাঁজরে বাঁচিয়ে রাখবে!!

অনিমেষ অন্যমনে নীল স্মৃতির সরোদ বাজায়-কপালের নকশাতে ভজকট বেঁধে যাওয়াতেই কিনা সুতপা ঐ কলতলাতে আর অনিমেষ এই মারুতি গাড়িতে।পথের ধারের কলটাতে অনিমেষ সুতপাকে প্রায়ই সপ্তাহান্তের ময়লা কাপড়গুলো কাঁচতে দেখে।কে জানে,হয়তো বা সুতপাকে একনজর দেখার জন্যেই অনিমেষ রোজ এক জায়গায় গাড়ি থামায়।আবার মাঝে মাঝে দেখেও না দেখার ভান করে।অনিমেষ নিজের অজান্তেই ঘড়ির কাঁটার উল্টোপথে চলতে থাকে,তার মনে পড়ে যায়-
কতকিছু দেওয়ার ছিল তার সুতপাকে আর কত কিছুই না পাওয়ার ছিল !! সুতপার সেই আনকোরা হাতে রাঁধা পায়েসান্নের কথা মনে পড়ে যায় অনিমেষের।সুতপার কাছে পাওনা ছিল-কোন এক রাতে সংসারী উনুনে বউ বউ হাতে রাঁধা আলুর সুপ্ত,রোজ সকালে স্নানের পরে ভেজা চুলের সই সিঁথিতে সিঁদুরে লাল সুখ লালিমার,একজোড়া হাত শঙ্কজোড়া,রোজ বিকেলে সাজবে বলে কাজল টিপের বায়না ধরা----- আরও কত কি !! অনিমেষেরও সুতপাকে দেবার ছিল-আলতো করে ঘোমটা টানা ষোলআনা বাঙালিয়ানা,সংসারী সুখ মধ্যবিত্ত,সেই চিলেকোঠার নীল ঘরটায় গান কবিতার সংসারেতে প্রথম পাতার সত্ত্বাধিকার।একজোড়া অশ্রুহারা স্বপ্নালু চোখ,আর দশমীরাতে আঁধখানি চাঁদ সাথে সুহৃদ বন্ধু একটা তারা।কিন্তু দুর্বোধ্য নিয়তি ষোলগুটি খেলতে চাইল বলেই কি আজ সুতপা তার বউ হতে পারে নি !! অথচ আবেগের রোশনাই ছড়ানো মাতাল কৈশোরের শুরুতে একটা বিশুদ্ধ প্রেম নিয়েই এসেছিল মেয়েটা।সুতপার সবকিছুই ভাল লাগত অনিমেষের,শুধু অনুপস্থিতিটা ছাড়া।মনে পড়ে,প্রথম চিঠিটা কিন্তু সুতপাই লিখেছিল।শুরুতেই প্রথম প্রেমের বানান ভুল।তবু অনিমেষ ঠিকঠাক করেই পড়ে নিয়েছিলো।চিঠির উত্তরে সে কি লিখেছিল সেটা তার ঠিকই মনে আছে,তবু সে মনে করতে চায় না,হয়তো বা অন্য অনেকের মতোই ইচ্ছে করে কষ্ট কুড়াতে ভালবাসে না অনিমেষ।কিন্তু সুতপা যখন কয়েকদিন পর নিজের চিঠিটা নিজেই ফেরত নিতে এসেছিল তার কাছ থেকে,তখন কিন্তু সে অনিচ্ছেতেই কষ্ট কুড়িয়ে নিয়েছিল।সেদিন সুতপার কোনকিছুই স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল না অনিমেষের কাছে।এখনও মাঝে মধ্যে ভুল করেই ভাবনা খেলায় অনিমেষ, সুবোধ বুঝি তার জন্যেই লিখেছিল------

“মেয়েরা ঈষৎ উন্মাদ হলে চিঠি লেখে,কিন্তু বেশি উন্মাদ হয়ে গেলে
চিঠি ফেরত নিতে আসে।”

অনিমেষের কোন দোষ ছিল না সেদিন।অথচ সুতপারও কোন দোষ ছিল না।বেচারী কিশোরী প্রেমিকা প্রথম প্রেমের উন্মাদনায় খেই হারিয়ে ফেলে ধরা পরে গিয়েছিল বাবার হাতে।তারপর তো সব শেষ।মাত্র পনেরোতেই সংসারী হয়ে গিয়েছিল সুতপা।এখন সে রায়নগরের মোড়ে ভাড়া বাসার সংসারে পুরোদস্তুর গৃহিণী ।হঠাৎ অনিমেষের প্রায় আট বছর আগেকার এক “শিবরাত্রি”র কথা মনে পড়ে যায়।সেই উপলক্ষে অনিমেষের নামে মানত করে উপোস থাকতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছির সুতপা।সেই খবরটা শুনে অনিমেষের খুব ইচ্ছে হয়েছিল সুতপার কাছে ছুটে যাওয়ার,কিন্তু সে পারে নি।সারারাত একা একা তাকে কাঁদতে হয়েছিল।আজ সেই কান্নার কথা মনে হতে নিজের অজান্তেই অনিমেষের চোখ ভিজে উঠে।ঠিক তখনই সব সাজানো নীরবতা ভেঙে দিয়ে তার গাড়িটা একেবারে পাশ ঘেসেই, ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে অবিশুদ্ধ উচ্চারণে নিজস্ব জাতীয় সংগীতটা গাইতে গাইতে ব্যস্ত পায়ে হেঁটে যায় সেই পাগলা জগাই।তাকে সবাই পাগল বলে।এ নিয়ে তার অনুযোগ ছিল না কোনদিনই।লাগামপচা ঠোঁটের হাসিতে সরলতা লেগে থাকে সারাদিনমান।যেন পাগলা জগাই পাগল হতে পেরেই সুখে আছে।অনিমেষের মনে পড়ে যায়,একদিন সে মোহন কাকুর দোকান থেকে পাঁচ টাকার মিষ্টি একটা খিলিপান কিনে দিয়েছিল এই পাগলটাকে,আর বলেছিল-আমার কোন কষ্ট নেই,তাই নষ্ট হবার তাড়া নেই,আর তাই তোমার মতো হাসতে পারি,চোখটা লাল করে,মনগড়া দুঃখ নিয়ে ন্যাকা কান্না আমি কাঁদি না।পাগলা জগাই এর উত্তরে সেদিন ময়লা দাঁতের হাসি দিয়ে উপহাস করেছিল অনিমেষকে,আর বলেছিল-মিথ্যে বললি তুই;শুনিসনি বুঝি,সুবোধ বলেছিল-মানুষ অন্ধকারে যতোটা কাঁদে,আলোতে ততোটা কাঁদতে পারে না রে বোকা।অনিমেষ সেদিন ধরা খেয়েছিল,মিথ্যে বলে।তখনো পাগলা জগাই হাসছিল,সুখে –দুখে বারোমাসে জীবনটা ভালোবেসে,সবকিছু অবশেষে।

অনিমেষ আবার ভাবনার ফাঁকে চোরা চোখে খুঁজতে লাগলো সুতপাকে। তার মারুতি গাড়িটার কাঁচের জানালার ক্যানভাসেতে সুতপাকে দেখতে আগের মতো এত সুন্দর লাগে না এখন।হঠাৎ একসময় দামী গ্লাস ভিউটার পর্দায় নিজের সাথেই নিজে মুখোমুখি হয় সে।তখন আয়নার ওপাশের অনিমেষ হয়তো বাস্তবের অনিমেষকে তাচ্ছিল্য করেই বলে উঠে-

“না রে বন্ধু,না, সুতপা এখনো সেই আগের মতোই আছে,তোর উচ্চবিত্ত থাইগ্লাসের জানালাটাতেও ময়লা জমেনি খুব একটা,আসলে বদলে গেছে তোর দৃষ্টিভঙ্গিটা।আর তাই বুঝি তোর সংসারের উর্বশী বউটাকে আজও চিনতে পারলি না তুই ।”

হঠাৎ সংবিতে ফিরে অনিমেষ।ভাবনার করিডোরে খুব বেশি ময়লা জমে যাচ্ছে।করোটির নিউরনগুলো অবাধ্য হয়ে ছুটোছুটি করছে নিয়ত।ড্রাইভার গাড়িতে ফিরে এসে আবার ইঞ্জিন স্টার্ট করে দেয়।বেনসনের প্যাকেটটা আবার ভরা পেট নিয়ে ফিরে এসেছে।একটা সিগারেট ধরিয়ে অবিরত ধোঁয়ার পাক তৈরী করতে থাকে অনিমেষ।গাড়ির মিউজিক জংশনে তখন খুব প্রিয় একটা কন্ঠ অ্যাকুইস্টক হাতে নিয়ে গাইতে থাকে----------------

“ঐ নীল আকাশটা মিথ্যে বলে,
বৃষ্টি হবে আজ বিকেলে।
ছোট্ট আমার ছাতার তলে,
খুঁজে যদি পাই চোখ দুটো সেই
সন্ধি যেথায়, জল-কাজলে।
বৃষ্টি হবে আজ বৃষ্টি হবে,
বৃষ্টি হবে------আজ বিকেলে।

ঐ রোদমাখা পথ চাপা খেয়োলে,
নাইবে যে আজ বর্ষা জলে।
তাই ডাকছে সে যে একলা আমায়,
দুকলা হতে তারই কোলে।
বৃষ্টি হবে আজ বৃষ্টি হবে,
বৃষ্টি হবে-------আজ বিকেলে।।

ঐ হলদে কদম দুদুল দোলে,
মনের ভুলে আমায় বলে।
কোথায় তোমার অনিন্দিতা,
ডাকো তারে দেখব বলে
বাদলা দিনের শেষ বিকেলে।
বৃষ্টি হবে আজ বৃষ্টি হবে,
বৃষ্টি হবে-------আজ বিকেলে।।

তাই বেলা শেষের গানের ছলে,
ডাকছি তোমায় আসবে বলে।
হাঁটবে যে পথ আমার পথেই,
বৃষ্টি মেখে নীল আঁচলে।
বৃষ্টি হবে আজ বৃষ্টি হবে,
বৃষ্টি হবে-------আজ বিকেলে।।”

সিগারেটের পাংশু ধোঁয়ার কুন্ডলীতে আবার ভাবনার আদর মাখতে মাখতে অনিমেষ ছাই জমা রাখে অ্যাশট্রেতে।বিচ্ছেদের হলুদ পাতায় শেষ স্বাক্ষরটা কি না করলেই নয়।আবারও কি ফিরিয়ে আনা যায় না আলোরিকার মা-মণিকে।তাহলে হয়তো ঐ অবুঝ শিশুটার প্রশ্নের খাতায় একটা প্রশ্ন কম পড়ে যেত কোনমতে।অনিমেষকেও আর বুকে পাষাণ বেঁধে নিয়ে প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে হতো না।মনের দেয়ালে চুনকাম হয় না সে বহুদিন,পড়ে না কোন রংয়ের পলেস্তারা।মনগড়া দ্বীপে নির্বাসনে থাকা আর ভাল লাগে না।একটা সুখের জমজ কবিতা লিখতে হবে আবার।কুয়াশার জ্যাকেট গায়ে জোনাকিরা যখন যাবে জোৎস্নার পিকনিকে,তখন অনিমেষেরও তো অনিতাকে সাথী করে নিতে হবে সেই জোছনাবিহারে।অনিতারও অনিমেষের কাছে বেশি কিছু চাওয়ার ছিল না কোনসময়ই।শুধু নিজের ইচ্ছে মতো ভাল-মন্দ রেঁধে অনিমেষকে খাওয়ানো,রোজ ছুটিবারে অদূরে কোথাও ঘুরতে যাওয়া,তাও মারুতি গাড়িতে করে না,রিকশায় চড়ে।প্রত্যেক রাতে ঘুমোবার আগে অনিমেষের প্রিয় গানটা,সেই যে “মায়াবন বিহারিণী” গেয়ে শুনানো।অনিতা চেয়েছিল আলোরিকার “মা” হতে,আর খুব করে চেয়েছিল অনিমেষও যেন আলোরিকার “বাবা” হয়ে ওঠে।অনিমেষ জানে,অনিতার সেই চাওয়াগুলো সে পূরণ করতে ‍পারবে ।অনিমেষ ইচ্ছে করলেই আবার শুরু হতে পারে তাদের নতুন পথচলা।অনিতাও হয়তো পথ চেয়ে বসে আছে তার।কোনদিন অনিমেষ তার রাগ ভাঙিয়ে নিয়ে যাবে নিজের ঘরে।হঠাৎ কোন একদিন দরজায় হাজির হয়ে পরিচিত কণ্ঠে হয়তো বলে ওঠবে--------
“কেউ ডাকে নি তবু এলাম
বলতে এলাম ভালবাসি।”

মায়া মায়া জোছনায় শঙ্খ লেগে মিলে মিশে থাকুক না দুইটা শুভ্র ভোর।নিকোটিন চোষা আঙুলে আবার যদি মুছে দেওয়া যায় সেই নরম গালে শুকিয়ে যাওয়া কান্নার দাগ ।শিরশিরে আদরের মাঝখানে আবার যদি শুরু হয় সেই গল্পের ক্লাস।---------তবে তাই হোক।।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
তাপসকিরণ রায় সুন্দর কাব্যিক একটি গল্প--মনোমুগ্ধকর ভাবনা বিজড়িত একটি লেখা। সঙ্গে কাহিনী চিত্রটিও বেস সুন্দর। লেখককে জানাই আমার মনোমুগ্ধতা।
ভালো লাগেনি ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
মোঃ মহিউদ্দীন সান্‌তু চমৎকার লেখা, শুধু মুগ্ধমনে পড়লাম। ভালোলাগা প্রতিটি কথায় কথায়।
ভালো লাগেনি ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
দীপঙ্কর বেরা সুন্দর লেখাটি । খুব ভাল লাগল ।
ভালো লাগেনি ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
রনীল লেখার স্টাইলটি জমাট, উপলব্ধি আছে ষোল আনা। তবে উপমার ব্যবহারে আপনি বেশ সিদ্ধহস্ত- বোঝা যাচ্ছে। কাহিনীটি সাধারণ, কিন্তু লেখনীর কারনে পাঠক গল্পে খুব সহজে মগ্ন হয়ে যাবে। বৃষ্টির কবিতাটি অপূর্ব। এটি কি আপনার নিজের লেখা?
কবিতা না গান।আমার নিজেরই লেখা।আনকোরা টিউনিংও করার চেষ্টা করেছি।এইটুকুই।ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
এশরার লতিফ ভালো লাগলো গল্পটি, শুভেচ্ছা.
কবি এবং হিমু এতো সুন্দর করে লিখেছেন যে বেশ কয়েকবার পড়া হয়ে গেছে।শুভেচ্ছা রইল।
ভালো লাগেনি ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
ওয়াহিদ মামুন লাভলু প্রথম প্রেমের রাজকন্যার এলোচুলের নৈর্ব্যত্তিক খোঁপা বাধা দেখে প্রেমিক ঠোঁটে বলে ওঠতে পারতো------- “যে রাতে গুঁজেছো চুলে বেগুনি রিবন বাঁধা ভাট, সে রাতে নরকও ছিলো প্রেমের তল্লাট।”---------------------- অসাধারণ প্রকাশ। খুব ভাল লাগল। শ্রদ্ধা জানবেন।
ভালো লাগেনি ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
মুশফিক রুবেল খুব ভালো লাগলো,শুভেচ্ছা রইল
ভালো লাগেনি ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

১০ জুন - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ১৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪